স্টাফ রিপোর্টার:  সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে আরও ১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগ এনেছে দুদক। দেশে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া এসএম আমজাদ হোসেন একই সঙ্গে লকপুর গ্রুপের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের (কেপিপিএল) চেয়ারম্যান।

‘কাগুজে’ কোম্পানি গঠন করে এবং জাল কাগজের মাধ্যমে আলাদাভাবে নিজের ব্যাংক থেকে এ পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন তৎকালীন চেয়ারম্যান আমজাদ বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

সোমবার এ অভিযোগে আমজাদ, ব্যাংকের এক পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুদক। এ নিয়ে ‘পলাতক’ আমজাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিনটি মামলা করলো সংস্থাটি।

কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলা দুটি করেন দুদকের উপ পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বলে জানিয়েছেন দুদকের উপ পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।

এক মামলায় আমজাদের পাশাপাশি ব্যাংকটির পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মোয়াজ্জেম হোসেনকে আসামি করা হয়। তবে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ শরফুদ্দিন ও ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. তানজির উদ্দিন চৌধুরী দুই মামলায় আসামি হয়েছেন। অন্যদের এক মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এর আগে গত ২১ অক্টোবর একটি ‘কাগুজে’ কোম্পানির নামে সাউথ বাংলা ব্যাংকের ২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঋণ তুলে আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকের ওই সময়ের চেয়ারম্যান আমজাদসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

নতুন দায়ের করা একটি মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সাউথ বাংলা ব্যাংকের বিজয়নগর (তৎকালীন মতিঝিল) শাখার ব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহায়তায় প্রতারণার মাধ্যমে রাফি-মাহি করপোরেশন নামের কাগুজে একটি কোম্পানির মাধ্যমে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে ঋণ অনুমোদনের আগেই তৎকালীন চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ১২ কোটি ১১ লাখ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। পরে সেই অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আসামিরা পাচার করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এ মামলায় আমজাদ ও মোয়াজ্জেম ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- রাফি-মাহি করপোরেশনের মালিক এ কে এম আসিফ উদ্দিন, সাউথ বাংলা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ শরফুদ্দিন, ব্যাংকের নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ, ফার্স্ট অ্যাসিটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রুমন-উল-ইসলাম, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. তানজির উদ্দিন চৌধুরী এবং ব্যাংকের মাধবদী উপ শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাসরিমা নাহিদ।

অপর মামলায় আমজাদ ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- সাউথ বাংলা ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ শরফুদ্দিন, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. তানজির উদ্দিন চেীধুরী, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. বুলবুল ইফতেখার আলী, আল-আমিন করপোরেশন নামের একটি কোম্পানির স্বত্ত্বাধিকারী মো. মাসুদুর রহমান এবং শরীয়তপুরের নরিয়ার বাসিন্দা জামাল আহমেদ।

এ মামলায় বলা হয়েছে, সাউথ বাংলা ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া এসওডি-ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে ব্যাংকের ওই সময়ের চেয়ারম্যান আমজাদ ছয় কোটি আট লাখ টাকা উত্তোলন করে অন্য আসামিদের যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন।

দুই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।